বুধবার, ২৯ মে, ২০১৩

দেশ আমার আজ মৃত্যুকূপে পরিনত !

কি বিচিত্র এই দেশ আমার। ৯০% মুসলমানের এই দেশে মুসলমানরাই আজ সংখ্যালঘু। গত ২৫ মার্চ  হরতাল-সমর্থকদের দেওয়া আগুনে গাড়িসহ পুড়ে গুরুতর আহত হয়ে ৬ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান মোঃ মুসা। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে শুধু বিবি সখিনা নন,পুরো পরিবারই এখন দিশেহারা। এটা শুধুমাত্র পত্রিকার একটা নিউজ এবং রাত পোহালেই ভোর হওয়া মাত্রই মুসার এই খবরটি গত হয়ে যাবে এবং এটি একটি বাসি খবর হয়ে যাবে। এবং আগামীকালকে পত্রিকা খুললেই আরেকটা মুসার মৃত্যুর খবর আমরা দেখবো এভাবেই পরশু, তরশু আরো কয়েকটা লাশ এবং কয়েকটা পরিবারের ধংশ হয়ে যাওয়া খবর আমরা গলদকরন করবো। কিন্তু খবরদার কেও কোনো আওয়াজ তুলবেন না। পৃথিবীতে কবি নজরুল, রবী ঠাকুর, একবারই এসে ছিলো। এই দুই মহান লেখকের লেখনিতে ছিল যেমন ঝোড় তেমন ছিল বুক ভরা সাহস। এরা বুক ফুলিয়ে বৃটিশদের বলতে পেরেছিল এদেশ ছাড়বি কবে বল? আবার এটাও বলতে পেরেছিলো আমি বগবানের বুকে একে দেবো পৃথিবীর পদচিহ্ন।

আজকে একদল ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্যে মরিয়া হয়ে শাষক দিয়ে শাষন করছে আমাদের। আবার অন্যদিকে আরেক দল ক্ষমতা লাভের জন্যে যেখানে যেটা পাচ্ছে সেটা নিয়েই রাস্তায় নেমে আসছে। আর এই দুই শ্রেণীর কর্মশূচীতে দর্শকদের একশ্রেণীর মানুষ বলির পাঠা হচ্ছে  আরেক শ্রেণীর দর্শক এই সব দেখে হায় হায় করছে। আজকে যারা বিরোধী দলে আছেন তারা যদি ক্ষমতায় আসেন উনারা কি এই রক্তের খেলা বন্ধ করতে পারবেন? রক্তের দাগ কখনো মুছে যায় না। আগামী দিনে এই রক্ত দীগুন হয়ে ঝড়বে। জনগনকেই আজকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা কোন পথে হাটবো। সস্তা রাজনীতির সস্তা কর্মসুচী পালন  করার জন্যে আমারা আর কতো রাস্তায় নেমে আসবো? দেশটাযে দিনে দিনে মৃত্যুকূপে পরিনত হতে চলেছে সেদিকে কারো  নজড় যায় না। সোনার বাংলা আজ রক্তমাখা লাশে পরিনত। এই মাটি রক্তমাখা মৃতদেহ আর বহন ক রতে পারছে না। এই মৃত্যুকূপ থেকে আমাদেরকে উদ্ধার করার জন্যে পাঞ্জেরীরূপে কেও আসবে সেই অপেক্ষায় বসে থাকার সময় এখন আর নাই। আজ সময় এসেছে প্রত্যেককেই নিজ নিজ জায়গা থেকে পাঞ্জেরীর ভূ্মিকা পালন করার।

রবিবার, ২৬ মে, ২০১৩

কর্নেল তাহে্র হত্যা মামলা এবং ব্যারিষ্টার মৌদুদ আহমেদের বই নিয়ে তীব্র সমালোচনা.

নিজের সৃষ্টিই এখন নিজের বৈরী। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত এবং সমালোচিত অতিথি পাখিটির নাম হচ্ছে মাননীয় সংসদ সদস্য ব্যারিষ্টার মৌদুদ আহমেদ। সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ উনাকে মন্ত্রী, উপপ্রধানমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী ও শেষ পর্যন্ত সংবিধান সংশোধন করে তাকে উপ-রাষ্টপতি পদেও বসিয়েছিলেন। কিন্তু উনি সেটা আর বুঝলেন কই! উনার নিজের প্রকাশিত একটি বইয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লং ড্রাইভে যাওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে এক ধরণের কুৎসিত ইঙ্গিতও দেন তিনি। সে সময় জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরে তাকে নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়। তবে তিনি রাজনীতির মাঠে যে একজন ঝানু খেলোয়ার সেটা তিনি প্রমান করেছিলেন সেই সময়ই। কারারুদ্ধ এরশাদের কাছ থেকে একটি চিরকুট পাঠানোর ব্যবস্থা করেন উনি, যেটাতে লেখা ছিলো "মওদুদ যদি তার বইয়ে উল্লেখিত মন্তব্যের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন তাহলে তাকে ক্ষমা করা যেতে পারে"

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার কর্নেল তাহেরের মৃ্ত্যুদন্ড দেওয়ার পেছনে জিয়ার ভূ্মিকা নিয়ে যে কথাগুলো মৌদুদ সাহেব উনার নিজের বইয়ে লিখেছিলেন সেটা নিয়ে বি এন পির রাজনীতিতে যে আলোচনার ঝড় বইছে সেটা তিনি কিভাবে সামাল দিবেন সেটা মনে হয় ইতিমধ্যে ঠিক করা হয়ে গেছে। এরসাদের আমলে এরসাদ যখন কারাগারে ছিলেন তখন তিনি কারারুদ্ধ এরসাদের কাছ থেকে নিজেকে বাঁচানোর শেষ চিরকুটটা আদায় করিয়ে নিয়েছিলেন। এখনতো তারেক রহমান বিদেশের মাটিতে,মৌদুদ সাহেব কি এখন তারেক রহমানের কাছ থেকে কোনো চিরকুট আনাবেন নিজেকে বাঁচানোর শেষ রক্ষাকবচ হিসেবে?

ঢিল ছুড়ে দিয়েছেন অনেক আগেই। এখন সেটাকে ফেরত আনার আর উপায় নাই। নিজের প্রকাশিত বইয়ে যা লিখেছেন সেটাতো আর মুছা যাবে না। উনি হয়তো এখন টনি ব্লেয়ারের সেই উক্তিটির প্রয়োগ করবেন, "The first rule in politics is that there is no rule". মৌদুদ সাহেবের এটা খুব ভালো করে জানা আছে রাজনীতির মাঠে গোলবার টা মাঠের এক প্রান্তে থাকে না এটা প্রত্যেকের পায়ে থাকে, যার যখন খুশি ইচ্ছামত মাঠের যেকোনো জায়গায় একটা গোলবার বানিয়ে শুধু কীকটা জায়গা মত করতে পারলেই হলো। উনি যে স্বার্থেই কথা গুলো লিখেছেন, সেটাকে দলীয় স্বার্থে মিথ্যার প্রলেভ দিয়ে মুঁছে দেয়ার চেষ্টা হবে সত্যের উপর কালিমা লেপন।

মন্তব্যঃ আদালতের কাছে এত তথ্যপ্রমানাদি থাকার পরও মৌদুদ সাহেবের একটা বইয়ের উদাহরন টানার কারনটা বুঝে উঠতে পারলাম না।

রবিবার, ১৯ মে, ২০১৩

ভারত বাংলাদেশ ছিটমহল সমস্যার দ্রুত সমাধান চাই।

ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ভারত বাংলাদেশ স্থুল সীমান্ত চুক্তি তিনবার সাক্ষরিত হলেও এর বাস্তবায়ন এখনো হয়নি।প্রথম সাক্ষরিত হয়ছিল ১৯৭৪ সালে।  ১৯৪৭ সালে ভারত পাকিস্থান বিভক্ত হলে প্রথম দেশহীন হয়ে পড়েন ছিটমহলবাসী। ছিটমহল শব্দটির সাথে জড়িয়ে আছে কিছু দেশের নাগরিকের রাতারাতি দেশহীন হয়ে পড়ার গল্প। আছে নাগরিক আধিকার, মানবাধিকার ও জীবনের মৌলিক অধিকার বঞ্ছিত হয়ে পড়ার গল্প। রেডক্লিফের এক কলমের আঁচড়ে হঠাতই দেশহীন হয়ে পড়েন দুদেশের ছিটমহলের মানুষগুলো। ৬৫ বছর পার হয়ে যাবার পরও এর সুরাহা এখনো হয়নি। ভারত বাংলাদেশ ছাড়া আর মাত্র একটি দেশ, ফিলিসস্থিনের জনগনকে এ নির্মম ভাগ্য বরণ করতে হয়েছে। এছাড়া পৃথিবীর আর কোথাও ছিটমহলের নামে নাগরিকদের অধিকার হরণের বিরল ঘটনা নেই। ভারতের অভ্যন্তরে বাংলাদেশের ৫১ টি এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের ১১১ টি ছিটমহল রয়েছে।

বাংলাদেশি ছিটমহল গুলোতে জনসংখ্যা রয়েছে প্রায় ১৪ হাজার এবং ভারতীয় ছিটমহল গুলোতে জনসংখ্যা র‍য়েছে প্রায় ৩৭ হাজার। এই সীমান্ত চুক্তি নিয়ে বিরোধী দল একেবারেই চুপ। ভারত সরকার স্থলসীমান্ত চুক্তিটি এখনো তাদের পার্লামেন্টে অনুমোদন করাতে পারে নাই। সরকার কিছু্দিন আগে উদ্যেগ নিলেও এই ব্যাপারে তাদের পক্ষ থেকে তেমন একটা উদ্যেগ আর চোখে পড়ছে না। যতদিন না পর্যন্ত ভারতীয় পার্লামেন্ট এই চুক্তি অনুমোদন দিচ্ছে ততদিন পর্যন্ত ঝুলে থাকবে ছিটমহলবাসীর ভাগ্যের পরিহাস। তারা তাদের নাগরিক অধিকার পাবে না।

উল্লেখ্য যে ভারত সরকার এই মে মাসে তাদের পার্লামেন্টে এই স্থুল সীমান্ত চুক্তি প্রস্তাব তোলার পর বিজেপি তাদেরকে শর্ত দিয়েছিল রেলমন্ত্রি এবং আইনমন্ত্রির পদত্যাগ না করা পর্যন্ত কোনো বিল পার্লামেন্টে পাশ করতে দেবে না। ভারত সরকার সেই দাবি মেনে নিয়ে দুইমন্ত্রিকে পদত্যাগ করায়। এই দিকে আসামের দুই সংসদ সদস্যও এই বিলের বিরধীতা করে। যাই হোক এটা তার দেশের আভ্যন্তরীন ব্যাপার। কিন্তু আমাদেরকে কেন খেসারত দিতে হবে। আমরা কেন ভোক্তভূগী হবো? এখনো আমরা ওই চুক্তি পাশ করা নিয়ে আশার আলো আর দেখতে পাচ্ছি না। কাজেই সরকারের পক্ষ থেকে আবারো চাঁপ দিতে হবে ভারত সরকারকে। আর কতদিন এভাবে ছিটমহল বাসীদের উব্দাস্তুদের মতো জীবন যাপন করতে হবে?

শনিবার, ১৮ মে, ২০১৩

বাংলাদেশের বিদ্যমান রাজনিতী নিয়ে আমাদের সঙ্কা !

আমাদের উন্নতির প্রধান অন্তরায় নিহিত রয়েছে রাজনৈতীক দলের গঠনতন্ত্রে। এখানে যে যাই কিছু করুক তার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিবে একমাত্র দলীয় প্রধান। দলীয় ফোরামে যা কিছু আলোচনা হোক না কেন সেখানে দলীয় প্রধানের মনগড়া সিদ্ধান্তই হল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে,তাহলে সেই অভিযোগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিবে কে? উত্তর হচ্ছে প্রশ্ন কর্তা একজন পাগল! দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা মানে আপনি দলের ভেতরে সংস্কারপন্থি হিসেবে বিবেচিত হবেন। এই যদি হয় আমাদের রাজনৈতীক দলগুলোর ভিতরের গনতন্ত্রের চর্চা তাহলে দেশের সাধারন মানুষের অভিযোগ গুলো আমরা কার কাছে তুলবো। যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে বিরোধী দল ওই সরকার পতনের অন্দোলনে নেমে পড়ে। ধরে নিলাম সরকার পতন হল এখন ক্ষমতায় আসবে কে? উত্তরটা সবাই জানি।

 এখন কথা হচ্ছে এমন যদি হতো সরকার পতনের সাথে সাথে দলীয় প্রধানের পদ থেকে দলীয় প্রধান সরে দাড়িয়েছেন এবং নতুন একজন স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তাহলে ধরে নেওয়া যেতো এই দলটা যখন আবার বিরোধী দলে থাকবে তখন এরা আবার একজন দায়ীতবশীল বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবে। আমাদের দেশে বিরোধী দল মানেই হল হরতাল দেওয়া, ভাংচুড় করা,সংসদে না যাওয়া, সংসদে না গিয়েও মাস শেষে বেতন ভাতা নেওয়া, একজন সাংসদ হিসেবে সবধরনের সুযোগ সুবিধা নেওয়া। একদল হরতাল দিল ১৭৩ দিন আবার আরেক দল যখন বিরোধী দলে আসলো তখন তারা আবার ওই ফিগারটাকে বীট করার যুদ্ধে নেমে গেলো। হরতালে যখন গাড়ি ভাংচুড় কম হয় তখন সরকারী দল ঘোষনা দেয় জনগন হরতাল প্রত্যাখান করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে এই ধরনের বক্তব্য বিরোধী দলের প্রতি কতটা উষ্কানিমূলক সেটা পরবর্তী হরতাল গুলোকে দেখলেই বুঝা যায়। কারন পরের হরতালেই শুরু হয় ঝালাও পোড়াও তান্ডপ।

 আবার এই দিকে সাংবাদিক গুলোও যখন হরতাল নিয়ে রিপোর্ট করে তখন রিপোর্টের এক পর্যায়ে বলতে শুনা যায় এই ভাবেই পালিত হলো ডিলেডালা হরতাল। এইটার মানে কি আমার বোধগম্য নয়। ডিলেডালা হরতাল মানে কী? আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে জাতীয় সমস্যা গুলোর ব্যাপারেও আমাদের বড় দুই দলের মধ্যে কোনো ঔক্যমত আমরা দেখতে পাই না। সরকারী দল এইটা সাপোর্ট করে তার মানে বিরোধী দলকে এর বিরদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। এইভাবেই এগিয়ে চলছে আমদের রুগ্ন গনতন্ত্র। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি আমাদের এই সোনার বাংলাদেশে তেমন ভাবে ছিল না আজকে সেটাও তোড়ঝোড় ভাবে শুরু হয়ে গেছে।  এরপর কি নিয়ে হবে জানি না।

 চারিদিকে যখন পরিবর্তনের সুর ঠিক তখনই দেখলাম আমি নিজেই পরিবর্তন হবার চেষ্টা করছি না। যাই কিছু বলি না কেন দেখা যাবে আমার নিজের দলের প্রতি আমার আনুগত্যটা প্রবল। তাহলে আর জনৈতীক দলগুলোকে দোষারুপ করে লাভ কি? গণজাগরন মঞ্ছটাকে আমরা সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারি নাই। এই মঞ্ছটা আসলে ছিলো বাঙ্গালী জাতির দীর্ঘদিনের পোষে রাখা ক্ষোবের ফসল। এই মঞ্ছটা হওয়া উচিত ছিলো রাজনীতিবীদদের কাছ থেকে ৪২ বছরের হিসাব নিকাসটা খুব ভালো করে বুঝে নেওয়ার। কিন্তু সেটাতো হলই না বরং অদূর ভবিষতে আরকেটা গণজাগরন মঞ্ছ করার চিন্তা করলে সেটা হবে মৌলবাদীদের মঞ্ছ। কারন জামায়াত শিবির এবং হেফাজতে ইসলাম ইতিমধ্যে তাদের আগমনের বার্তা বিভিন্ন তান্ডবের মাধ্যমেই বুঝিয়ে দিয়েছে।

কাজেই সময় এসেছে দলীয় রাজীনতি থেকে বের হয়ে নিরপেক্ষভাবে দেশটাকে নিয়ে ভাবা। এরপর লক্ষ্য ঠিক করা এবং সেই উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করা। জয় আমাদের হবেই কারন ভাষার জন্যে রক্ত দেবার ইতিহাস একমাত্র আমারা বাঙ্গালীরাই গড়েছি। অস্ত্র ছাড়াই দেশকে শত্রু মুক্ত করার শক্তি আমরা বাঙ্গালীরাই প্রথম দেখিয়েছি। কাজেই আমদের চেয়ে খাটি দেশ প্রমিক আর কে?

শনিবার, ১১ মে, ২০১৩

প্রধানমন্ত্রীর সাথে CNN এর সাংবাদিকের আচরন গ্রহনযোগ্য নয়।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে খুব সমালোচনা চলছে। ব্যাপারটা যখন আন্তজাতিক পযায়ে চলে গেছে তখন একজন বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে কিছু বলতেই হবে। যেভাবে সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন গুলো করেছেন এটা আমাদের দেশের কোন সাংবাদিক যদি আমেরিকার কোন president কে করতো তাহলে তার জীবনের জন্যে আমেরিকা যাওয়া বন্ধ হয়ে যেত। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে যারা সমালোচনা করছেন তাদের একটা কথা বলে নেই বাংলাদেশটা আমেরিকার কাছ থেকে পাই নাই। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমার এই বাংলাদেশ। মুক্তিযোধের সময় যখন লক্ষ লক্ষ মানুষকে কুকুরের মত গুলি করে হত্যা করেছে পাকিস্থানিরা তখন কোথায় ছিল আমেরিকাদের মানবতা?

সাভার ট্রাজেডি নিয়ে সরকার যতটুকু করেছে সেটা সবাই দেখেছি। নতুন করে কিছু বলার নাই। কিন্তু একজন সাংবাদিক বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে যেই প্রশ্ন গলো করেছেন সেখানে প্রধামন্ত্রী বেশিরভাগ উত্তর যেভাবে দেওয়া উচিত সেভাবেই দিয়েছেন। আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলি আমেরিকার সব accent আমদের বুঝার কথা না। আর আমাকে ১০০% বোঝতেই হবে এমন কোনো কথা নাই। আমরা যখন British দের সাথে কথা বলি তখন অনেক সময় half বুঝি বাকিটা বুঝি না তার পরেও উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করি। প্রধানমন্ত্রী সেই দিক থেকে খুব ভাল ভাবেই বুঝেছেন এবং কথাগুলোর উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। যারা সমালোচনা করছেন তাদের একটু নিজেদের নেত্রীর দিকেও তাকানো উচিত। 


বাহিরের দেশের সাংবাদিকদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় সেটা শেখ মুজিবের দেওয়া এক সাংবাদিকের সাথে সাক্ষাতকারটা দেখলেই বুঝা যায়। আমার দেশের প্রধানমন্ত্রীকে একজন সাংবাদিক এমন ভাবে কথা বলবে আর আমি বিরোধী দল করি বলে বাহ বাহবা দিব এটা অন্তত তরুন প্রজন্মের কাছ থেকে কেও আশা করে না। সবকিছুর উপর আমার বাংলাদেশের sovereignty.


আমি এখানে কাউকে defend করার জন্যে কথা গুলো বলি নাই আমার কথা গুলোর পেছনে একটাই কারন আছে আর সেটা হল CNN এর সাংবাদিক যেভাবে কথা বলছিল তার ভাবটা এমন ছিল যে সে আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল কিভাভে প্রধানমন্ত্রীকে অপমান করবে এবং CNN কে কেন বাংলাদেশে যেতে দিল না সেটার ঝাল মেটাবে প্রধানমন্ত্রীর উপর দিয়ে। একটা পযায়ে এসে সে প্রধানমন্ত্রীকে বলছে stop এবং সেই approach টা ছিল খুবই বাঝে। সারাটা interview জুড়ে তার মধ্যে বিনয়ি কোন ভাবটা ছিল না। আমি উন্নয়নশীল দেশের প্রধানমন্ত্রী বলে বাহিরের দেশের একজন সাংবাদিক যেন তেন ভাবে কথা বলতে পারে না। 

শেখ মুজিবুর রহমানের কথাটা আনা হয়েছিল শেখ হা্সিনার সাথে তুলনা করার জন্যে নয় বরং এইটা বুঝানোর জন্যে যে একজন সাংবাদিক কিভাবে তার সাথে কতটা বিনয়ের সাথে কথা বলেছিল এবং শেখ মুজিব কিভাবে উত্তর গুলো দিয়েছিল। কাজেই একজন প্রধানমন্ত্রী যখন বাহিরের সাংবাদিকের সাথে কথা বলবেন তখন তাকে নিজের দেশের জন্যেই কথা বলতে হবে এবং প্রয়োজনের খাতিরে কিছুটা diplomatic answer দিতে হবে এখন সেটা অনেকের কাছে মিথ্যা মনে হতে পারে। আর এটা না করে যদি সব কিছু confess করে কথা বলে থাহলে আমেরিকার মত দেশ গুলো পান থেকে চুন খসলেই আমদের উপর হস্তখেপ করা শুরু করবে। 

ব্যাপারটা যদি এমন হত সাভারের ঘটনা ঘটার পর সরকার একবারেই চুপ করে বসে আছে তাহলে বলা যেত প্রধানমন্ত্রী CNN এর সাথে গলা ফাটিয়ে মিথ্যা কথা বলছেন। যেখানে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করেছেন মাত্র কয়েক দিনের মাথায় এবং এদেরকে কিভাবে খতিপূরন দেয়া যায় পাশাপাশি শ্রমিকদের জন্যে বিজএমের সাথে কথে বলছেন শ্রমিকদের নিতিমালা নিয়ে সেখানে CNN কে এর চেয়ে বেশি কি বলবেন? কাজেই আমার কথাগুলোর পেছেন একটাই reason আজকে যিনি বিরোধী দলে আছেন উনি যখন প্রধানমন্ত্রী হবেন তখন উনার খেত্রেও আমার একি বক্তব্য থাকবে আমার দেশের প্রধানমন্ত্রীকে একজন বিদেশি সাংবাদিক তুচ্ছেতাচ্ছিল্য করা কথা বলবে সেটা আমি মেনে নিতে পারবোনা।

হেফাযতের ভিতরে লোকায়িত ষড়যন্তকারীরা !

প্রতিদিনের মত গাতকালকেও কাজে যাবার জন্যে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম মনটা কিছুটা ভিষন্ন ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট খেলায় হেরে যাওয়ায়। মনের মাঝে ভীষন উতকন্ঠা কাজ করছিল হেফাযতের ঢাকা ঘেরাও কমশূচী নিয়ে। তাই খেলা দেখছিলাম মনের ওই দূরাবস্থা দূর করার জন্যে। কিন্তু প্রতিনিয়ত চোখ যাচ্ছিল news update এর দিকে। বাংলাদেশে এখন কি অবস্থা। মনের এই অস্থির অবস্থাটা শুধুযে আমার মাঝেই কাজ করেছে এমনটা নয় লন্ডনে বসবাসরত হাজারহাজার বাঙ্গালীর মনেও একি সঙ্কা ছিল। কাজে যাবার প্রস্তুতি যখন প্রায় শেষের দিকে ঠিক তখনই mobile ringtone টা বেঝে উঠল receive করতেই অন্যপ্রান্ত থেকে কোনো কিছু বলার আগে একটা কথা আগে শুনতে পেলাম '''ওবেডা আস্তা ঢাকা শহরো আগুন লাগাইচ্চে,বাক্কা দূর আগুন লাগাইচ্চে মন অয়, আর সরকার পড়ছোইন বালা বিপদো অখন তারা কিতা করতো''' একটু বলে নেই উনি লন্ডনে স্থানীয় রাজনীতীর সাথে জড়িত। তবে অবাক লাগার বিষয় হল উনি বেশ আনন্দের সঙ্গে এই খবরটা আমাকে দিচ্ছিলেন।

ভাবতে অবাক লাগে এই মানুষটা রাজনিতী করে যে কিনা দেশে আগুন লেগেছে আর এটা দেখে সে খুশি তবে বুঝতে বেশি সময় লাগে নাই উনার খুশির আসল কারনটা যে সরকার বিপদে পড়ার কারনে। উনি কথাটা এইভাবে না বললেও পারতেন কিন্ত উনার দলগত অবস্থানের কারনে কথাটা এভাবেই ভেতর থেকে বের হয়েছে। খবরটা শোনা মাত্র ২ মিনিটের মত স্তব্দ হয়ে গেল আমার শরীর কারনটা বলার অপেক্ষা রাখেনা দেশটা তাহলে আফগান রাষ্ট্র হতে চলেছে। অবশেষে কাজ শেষ করে গভীর রাতে ঘরে ফেরার পালা তবে আজকে রাস্তা যেন আর শেষ হয় না। অবশেষে ঘরে এসেই Laptop নিয়ে বসে গেলাম খবর দেখার জন্যে। এবার মনে হয় খবরটা কিছুটা সস্থির, ঢাকা মোটামোটি সরকারের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের দখলে।

তবে সস্থিটা বেশিখন স্থায়ী হয় নাই কারনটা হল আবারো সেই ঘুরেফিরে কতগুলো নিষ্পাপ মানুষের মৃতদেহ জাতিকে দেখতে হয় কিনা সেই দুশ্চিন্তায়। হেফাযতের মূল নেতা যারা তাদেরকে জঘন্য ধমব্যাবসয়ী বলা ছাড়া ভাল আর কোনো title nai আমার কাছে। কিন্তু সারা দেশ থেকে কিছু ক্ষমতা লোভী মহলের টাকা খেয়ে যেভাবে লক্ষ লক্ষ ধমপ্রাণ মুসলিমদেরকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিয়ে এসেছে এদের কী হবে? যাহোক সরকার অতি অল্প সময়ে দেশে সস্থি ফিরিয়ে আনতে পেরেছে সেকারনে সরকারকে ধন্যবাদ। সরকারে প্রতি আকুল আবেদন থাকবে আর দেরি নয় দেশও জাতির উদ্যেশে একটা ভাষন দিন দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতি নিয়ে। সত্য ঘটনা তুলে ধরেন যাতে করে মুসলমানদেরকে কেও ভীন্ন পথে চালিত করতে না পারে।

আর হেফাযতের মূল নেতা গুলোকে অবশ্যই আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। কি plan ছিল তাদের, আসল চক্র কারা, কি তাদের উদ্যেশ্য ছিল। ইসলাম নিয়ে ভন্ডামি করতে দেয়া যাবে না, যদি সত্যিকারের ইসলাম প্রচার করতে চায় তাহলে আল্লাহর রাসূলের দেয়া নিদেশিত পথে দীনের দাওয়াত দিতে বলুন, দীনের দাওয়াত এত শহজ না হ্যালিকপ্টারে করে প্রজাপতির মত ঘুরে বেড়ালেই দীনের দাওয়াত দেয়া যায় না, ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে এসে সরকার পতনের আন্দোলনে নেমে গেছেন। বাংলাদেশের সরকার কি শুধু মাত্র মুসলিমদের জন্যে? বাকি অন্যান্য religion দের সরকার কে বারাক ওবামা? মুক্তিযুদ্ধ কি শুধুমাত্র মুসলমানরা করেছে? অন্যান্ন religion এর মানুষ করে নাই? সরকারের প্রতি আহবান থাকবে বিরোধী দলের দাবি election এর জন্যে তত্তাধায়ক অথবা নীরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার জন্যে আপনারা একটু আন্তরিক হয়ে আলোচনায় বসুন।

শাহবাগকে কেন্দ্র করে তরুনদের মাঝে বিভক্তি।

একজন সুনাগরিক যখন শুধু মাত্র শুধু মাত্র দলের সার্থে নিজের দেশের সমগ্র জাতির সার্থের কথা ভুলে যায় তখন সেখানে কথা বলা আর বনে গিয়ে কান্নাকাটি করা একই কথা। সবাই দেখলাম যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়,কয়েক দশক খুব চিল্লাপাল্লা হয়েছে এই বিচার নিয়ে,আজকে যখন বিচার শুরু হলো রায়ও হলো তখন আওয়ামীলীগ, বি এন বি সহ সকল স্তরের জনগন এক হলো শাহাবাগে। গড়ে উঠল প্রজন্ম চত্তর। আন্দোলনটাকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্যে একজনকে না একজনকে spokesman এর responsibility দিতে হবে। আর সেটা ডাঃ ইমরান হওয়াতেই মনে হয় বাধ সাদলো। শিবিরের ছেলে পেলেরা প্রথম থেকেই ফাক ফুকর খুজতেছিল কিভাবে এটাকে দমন করা যায়। একটা সময়ে দেখলাম রাজীব নামের এক ব্লোগার কে আবিষ্কার করলো তারা যার religious view এর সাথে শাহবাগের আন্দোলনের কোনো সাদৃশ্য নাই তার পরেও ওইযে এক ছাত্রের সব কিছু কুমিরে খেয়ে ফেলে,ঠিক ওই ভাবেই রাজীবের religious view টাকেই তারা এই খানে কাজে লাগালো শুরু হলো আস্তিক নাস্তিক issue.

আর এই খেত্রে সব চাইতে বড় নায়কের ভূমিকাটা পালন করেছেন মাহমুদুর রহমান। আমার দৃষ্টিতে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে নৃকৃষ্টতম একজন সাংবাদিক যে কিনা টাকার কাছে বিক্রি হয়ে যাওয়া ভবিষয়তে বি এন পিতে একটি ভাল পদ পাওয়ার জন্যে শুরু করলেন একের পর এক লেখনি। আর বি এন পি পন্থী মানুষ গুলো আস্তে আস্তে নিজেদেরকে গুটিয়ে নিতে থাকে শাহাবাগ থেকে এবং খুব সহজে মিশে গেল আস্তিক নাস্তিক issue তে । শুরূ হল সারা দেশে জামাত শিবিরের তান্ডপ। একই ভাবে হেফাযতের আগমন ঘটাল তাদেরকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার জন্যেই ছুড়ে দিল ১৩ দফা। আগুনে পুড়লো পবিত্র কোরআন শরীফ। অথচ উনারাই এসেছিলেন ইসলাম রক্ষার রক্ষক হিসেবে। সরকারের ভুল কোথায়,কোথায় corruption হচ্ছে, সেগুলোর জন্যে election এর সময় উপযুক্ত জবাব এই জাতি দিতে পারবে। কিন্তু এইযে তান্ডব সারা দেশে শুরু হয়েছে যদি দেশটাই না থাকে তাহলে জবাবটা চাইব কার কাছে? অনেক খারাপ লাগে যখন দেখি আমার বন্ধুরাই এই জামাতের হেফাযতের এই তান্ডব গুলোকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করে জামাত শিবিরের কতগুলো সস্তা সস্তা post দিয়ে। একটা সময় আসবে যখন জামায়াত শিবির পুরা কাঠাল টাই বি এন পির মাথায় ভেঙ্গে খাবে তখন বুঝবে দুধ কলা দিয়ে কাকে পোষেছিল। এটা কোনো prediction নয় তারপরও মনে রাখা প্রয়োজন জামায়াতকে নিয়ে বি এন পির আরেকটা election করা উচিত কারন বি এন পির কফিনে শেষ পেরেকটা জামায়াতই দিবে।

আমার জীবনের ছোট গল্প !

Facebook'এ Log in করেই প্রথমে একটা বাক্য দেখতে পাই Whats on your mind? আমার mind'এ বলার মতো কিছু নাই, তবে ডায়েরি ঘাটলে কিছু স্মৃতিকথা মনের কোনে ভেসে ওঠে, যা আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় আমার অতীত জীবনে। আজ তেমন কিছু কথা share করতে ইচ্ছে করলো আমার নিজের এই ব্লগে।

সময়টা ২০০৬, উচ্চমাধ্যমিকে পড়ি। কলেজের দিন গুলি প্রায় শেষ হয়ে আসছে। এমন সময় কলেজের annual sports and cultural programme শুরু হলো। দুই দিন ব্যাপি এই অনুষ্ঠান চললো। Prize giving ceremony চলছে। আমিও কিছু পুরষ্কার পেয়েছিলাম, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতে প্রথম, বক্তব্য প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় আর Debate-এ আমার দল প্রথম। যাইহোক, প্রায় সব পুরষ্কার দেওয়া শেষ, এবার একটা পুরুষ্কার দেওয়া বাকি এবং এটা last but not the least. এটা আসলে একটা award, নামকরন করা হয়েছে Principal Award. কলেজের সেরা ছাত্রকে দেয়া হত এটা। পুরস্কারটা পাওয়ার কল্পনাও যেন আমার কল্পনার বাইরে!!
কিছুক্ষণের জন্যে জায়গাটা নীরব হয়ে গেলো। সবাই চুপ। কিছুটা filmy style বলা চলে। microphone থেকে নাম ঘোষনা হবার আগে বলা হলো, এই award টা দেওয়া হবে একজন ছাত্রের ২ বছরের overall performance এর উপর base করে। যাইহোক, মাইকে নাম ঘোষনা হলো। নামটা আবার আমার নামের সাথে মিল আছে, মোঃ আশরাফুল ইসলাম! মনে মনে বলতে লাগলাম, যাক বাবা, আমার নামের ছাত্রগুলো তাহলে ভাল ছাত্রও বটে! কিন্তু পানি তখনো ঘোলা কারন কেউ উঠে যাচ্ছে না। পরে যখন বিভাগ,রোল নাম্বার বলা হলো তখন আমি কিছুটা হতভম্ব, কারন সবাই আমার দিকেই finger টা point করলো। এতক্ষণে আর বুঝার বাকি নাই ছাত্রটা আমিই,উঠে গেলাম award টা নিয়ে আসতে। মনের অজান্তেই emotional হয়ে গেলাম। সবার হাততালির মধ্যে দিয়ে award টা গ্রহন করলাম। বুঝে উঠতে পারছিলাম না ভুল টুল করলো কিনা স্যারেরা আবার। যাইহোক, পরে নিশ্চিত হতে পারলাম, নাহ এটা আমিই।

আমার সেই কলেজের আমার প্রিয় একজন স্যারের মেয়ে এবার S.S.C তে A* পেয়েছেন। ওনার মেয়ের জন্যে শুভ কামনা রইল। স্যার এখন আমার Facebook friend, ওনাকে আজকে আবারো ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কারন সেদিনের সেই award টা আমার জীবনটাকেই পাল্টে দিয়েছে। আমি আমার নিজেকে নতুন করে চিনতে পারলাম। আমাকে নিয়ে আমার বাবার expectation টা অনেক উপরে চলে গেল। বাবা ঠিক করে ফেললেন আমাকে দিয়ে ব্যারিষ্টারি পড়াবে। উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে British Law পড়া শুরু করলাম এবং বাবার dream টা কে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্যে সকলের দোয়া নিয়ে পাড়ি জামালাম লন্ডনে Bar at Law পড়ার জন্যে। এখানে আরেক ইতিহাস।
সময়টা ২০০৯ সাল। London'এ Holborn college এর student council election কোনো কিছু না বুঝেই নিজেকে জি.এস(General Secretary) candidate হিসেবে declare করে দিলাম। কারন এটা বাংলাদেশ না যে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে তারপর ছাত্র সংসদ election করতে হবে।এখানে যে নিজেকে যোগ্য মনে করবে তারই সুযোগ থাকবে। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে নাম declare করে দিয়ে বুঝলাম আমি front foot-এ নাই আবার back foot-ও নাই। আমার কোনো campaign নাই কারন আমার কোন প্যানেল ছিল না, যেখানে অন্যান্য candidate রা নিজেদের মত করে প্যানেল বানিয়ে তুমুল election campaign করে যাচ্ছে।

অনেকেই জিজ্ঞাসা করছিল, কি ভাই হাসানোর জন্যে নাকি নিজেই মজা নেওয়ার জন্যে election করতেছেন? কথাটা লেগে গেলো। বাসায় এসে আমার বন্ধুর সাথে আলোচনা করে election এর একটা slogan বের করলাম 'Change we need, Lets do it'. এরপর poster-এ আমার ছবির উপরেই দিয়ে দিলাম slogan টা। election এর দুইদিন আগে সকল candidate দের ডেকে এনে সকল student দের সামনে দাড়িয়ে speech দিতে বলা হলো। সেদিনই ছিল আমার turning point, যা বলার students-দের সামনে বলে দিলাম। প্রথমেই আমার slogan টা বললাম তারপর বললাম সবাই প্যানেল basis election করছে কিন্তু আমার কোনো প্যানেল নাই। আমি একা আর এর কারন আমি বাঙ্গালী আর বাঙ্গালী একাই একশো। এর প্রমান দেখতে চাইলে আমাকে ভোট দিতে হবে আমাকে পাশ করাতে হবে। God bless you all. আমার speech শেষ। Election হয়ে গেলো। আমার friends গুলো আমার জন্যে অনেক কষ্ট করেছেন দুই দিন, কারন ভোট গ্রহন হয়েছিল দুই দিন ব্যাপী। election এর ফলাফল প্রথম বাঙ্গালী হিসেবে জি.এস হিসেবে পাশ করে গেলাম।

২০০৯ সাল আমাকে অনেক কিছু দিলেও কিছু tragedy ছিল আমার জীবনে। সদ্য election'a পাশ করে কলেজের কাজে নিজেকে নিয়ে busy হয়ে গেলাম, এই দিকে LLB (Hons) final year exam চলে এসেছে। যথারীতি পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছি। একদিন এক পরীক্ষায় পরীক্ষা শুরু হবার আগেই invigilator এমন একটা কাজ করলো আমার পরীক্ষা দেওয়ার concentration হারিয়ে ফেললাম। তার ছোট্ট একটা ভুল কেড়ে নিল আমার জীবনের ৩ টা বছর। আমার পরীক্ষাটা খারাপ হয়ে গেল। Result বের হলো LLB (hons) পাশ করলাম ঠিকই। কিন্তু Bar at Law পড়ার যেই requirement সেটা আর হলো না শুধু মাত্র ওই একটা পরীক্ষা খারাপ হবার কারনে, ২ টা marks কম পাবার কারনে। এবার কি করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। একটা উপায় ছিল আমার জন্যে, Bar standard board এর কাছে discretion এর জন্যে apply করা। আমার marks ভাল ছিল তারপরেও আমি ওইটার জন্যে যাই নাই।

জীবনে ভাল কিছু বড় ভাইয়ের কাছাকাছি থাকার সুযোগ পেয়েছিলাম যাদের এখন কেউ কেউ Barrister কেউ কেউ on the way to be a Barrister .ওনাদের ভালো কিছু উপদেশে নিজেকে নিয়ে শুরু করলাম নতুন এক যুদ্ধ। যেই যুদ্ধে আমি একাই সৈনিক। যে LLB আমি ৩ বছরে শেষ করেছিলাম সেই LLB এবার আমি দুই বছরে আবার করার মনস্থির করলাম। এমন এক university তে admission নিলাম যেখানে কোনো বাঙ্গালী নাই। আর আমার পরিচিত কেও নাই। বলা চলে আমি এক প্রকার exile'এ চলে গেলাম। যাই হোক অনেক চড়াই উত্রাই পেরিয়ে আমি আমার double LLB টা শেষ করে ফেললাম। যদিও এটা নিয়ে আমার credit নেওয়ার কিছু নাই এবং আমি সেটা নেইও না কিন্তু এই LLB টা তে আমার তৃপ্তি ছিল। কারন Bar at Law করার জন্যে যে requirement টা লাগে সেটা আমি এই degree তে achieve করেছিলাম। Application করলাম Bar at Law এর জন্যে। Offer পেয়ে গেলাম।

অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় যে আমার জীবনে সমস্যা আমাকে ছাড়ে না। প্রতিনিয়ত আমি সমস্যায় পড়ে যাই। একটার পর একটা লেগেই আছে। হাজার সমস্যার মাঝে থাকলেও আমি নিজেকে খুব সুখি রাখার চেষ্টা করি।  আমি সেই লক্ষ্যে পৌছাতে চাই যেখান টাতে আমার বাবা আমাকে দেখতে চেয়েছেন। আমি জানি না এই Bar at Law degree টা তে কি আছে শুধু এইটুকু জানি এটা আমার বাবা মায়ের dream ছেলেকে Barrister হিসেবে দেখা। বাবা মা আমার কাছ থেকে কিছুই চায় নাই শুধু এই একটা degree ছাড়া। এতটুকু যদি না পারি তাহলে হয়তো সেই কলেজের পাওয়া Principal Award টা বাবা মায়ের কাছে ভুল প্রমানিত হবে যদিও আমি জানি আমি সেই award টার যোগ্য ছিলাম না । কাজেই বাবা মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে এখনো আমি যুদ্ধে হার মানিনি। ক্ষমতায় যাবার যে যুদ্ধ হয় সেটা শেষ হয় অল্প সময়ে এক পক্ষের পরাজ‍‍য়ের মধ্যে দিয়ে কিন্তু জীবন যুদ্ধ অনেক কঠিন সেটা অবিরত চলতে থাকে। এই যুদ্ধ সেদিনই শেষ হবে যেদিন আমি আর এই পৃথিবীতেই থাকবো না..............।

বিঃ দ্রঃ বানান ভুলের জন্যে ক্ষমা চাই। বাংলা ইংলিশ একসাথে লিখার জন্যে দুঃখিত। কারন ওই কথাগুলো বাংলা লিখতে পারছিলাম না।