শনিবার, ১১ মে, ২০১৩

আমার জীবনের ছোট গল্প !

Facebook'এ Log in করেই প্রথমে একটা বাক্য দেখতে পাই Whats on your mind? আমার mind'এ বলার মতো কিছু নাই, তবে ডায়েরি ঘাটলে কিছু স্মৃতিকথা মনের কোনে ভেসে ওঠে, যা আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় আমার অতীত জীবনে। আজ তেমন কিছু কথা share করতে ইচ্ছে করলো আমার নিজের এই ব্লগে।

সময়টা ২০০৬, উচ্চমাধ্যমিকে পড়ি। কলেজের দিন গুলি প্রায় শেষ হয়ে আসছে। এমন সময় কলেজের annual sports and cultural programme শুরু হলো। দুই দিন ব্যাপি এই অনুষ্ঠান চললো। Prize giving ceremony চলছে। আমিও কিছু পুরষ্কার পেয়েছিলাম, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতে প্রথম, বক্তব্য প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় আর Debate-এ আমার দল প্রথম। যাইহোক, প্রায় সব পুরষ্কার দেওয়া শেষ, এবার একটা পুরুষ্কার দেওয়া বাকি এবং এটা last but not the least. এটা আসলে একটা award, নামকরন করা হয়েছে Principal Award. কলেজের সেরা ছাত্রকে দেয়া হত এটা। পুরস্কারটা পাওয়ার কল্পনাও যেন আমার কল্পনার বাইরে!!
কিছুক্ষণের জন্যে জায়গাটা নীরব হয়ে গেলো। সবাই চুপ। কিছুটা filmy style বলা চলে। microphone থেকে নাম ঘোষনা হবার আগে বলা হলো, এই award টা দেওয়া হবে একজন ছাত্রের ২ বছরের overall performance এর উপর base করে। যাইহোক, মাইকে নাম ঘোষনা হলো। নামটা আবার আমার নামের সাথে মিল আছে, মোঃ আশরাফুল ইসলাম! মনে মনে বলতে লাগলাম, যাক বাবা, আমার নামের ছাত্রগুলো তাহলে ভাল ছাত্রও বটে! কিন্তু পানি তখনো ঘোলা কারন কেউ উঠে যাচ্ছে না। পরে যখন বিভাগ,রোল নাম্বার বলা হলো তখন আমি কিছুটা হতভম্ব, কারন সবাই আমার দিকেই finger টা point করলো। এতক্ষণে আর বুঝার বাকি নাই ছাত্রটা আমিই,উঠে গেলাম award টা নিয়ে আসতে। মনের অজান্তেই emotional হয়ে গেলাম। সবার হাততালির মধ্যে দিয়ে award টা গ্রহন করলাম। বুঝে উঠতে পারছিলাম না ভুল টুল করলো কিনা স্যারেরা আবার। যাইহোক, পরে নিশ্চিত হতে পারলাম, নাহ এটা আমিই।

আমার সেই কলেজের আমার প্রিয় একজন স্যারের মেয়ে এবার S.S.C তে A* পেয়েছেন। ওনার মেয়ের জন্যে শুভ কামনা রইল। স্যার এখন আমার Facebook friend, ওনাকে আজকে আবারো ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কারন সেদিনের সেই award টা আমার জীবনটাকেই পাল্টে দিয়েছে। আমি আমার নিজেকে নতুন করে চিনতে পারলাম। আমাকে নিয়ে আমার বাবার expectation টা অনেক উপরে চলে গেল। বাবা ঠিক করে ফেললেন আমাকে দিয়ে ব্যারিষ্টারি পড়াবে। উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে British Law পড়া শুরু করলাম এবং বাবার dream টা কে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্যে সকলের দোয়া নিয়ে পাড়ি জামালাম লন্ডনে Bar at Law পড়ার জন্যে। এখানে আরেক ইতিহাস।
সময়টা ২০০৯ সাল। London'এ Holborn college এর student council election কোনো কিছু না বুঝেই নিজেকে জি.এস(General Secretary) candidate হিসেবে declare করে দিলাম। কারন এটা বাংলাদেশ না যে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে তারপর ছাত্র সংসদ election করতে হবে।এখানে যে নিজেকে যোগ্য মনে করবে তারই সুযোগ থাকবে। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে নাম declare করে দিয়ে বুঝলাম আমি front foot-এ নাই আবার back foot-ও নাই। আমার কোনো campaign নাই কারন আমার কোন প্যানেল ছিল না, যেখানে অন্যান্য candidate রা নিজেদের মত করে প্যানেল বানিয়ে তুমুল election campaign করে যাচ্ছে।

অনেকেই জিজ্ঞাসা করছিল, কি ভাই হাসানোর জন্যে নাকি নিজেই মজা নেওয়ার জন্যে election করতেছেন? কথাটা লেগে গেলো। বাসায় এসে আমার বন্ধুর সাথে আলোচনা করে election এর একটা slogan বের করলাম 'Change we need, Lets do it'. এরপর poster-এ আমার ছবির উপরেই দিয়ে দিলাম slogan টা। election এর দুইদিন আগে সকল candidate দের ডেকে এনে সকল student দের সামনে দাড়িয়ে speech দিতে বলা হলো। সেদিনই ছিল আমার turning point, যা বলার students-দের সামনে বলে দিলাম। প্রথমেই আমার slogan টা বললাম তারপর বললাম সবাই প্যানেল basis election করছে কিন্তু আমার কোনো প্যানেল নাই। আমি একা আর এর কারন আমি বাঙ্গালী আর বাঙ্গালী একাই একশো। এর প্রমান দেখতে চাইলে আমাকে ভোট দিতে হবে আমাকে পাশ করাতে হবে। God bless you all. আমার speech শেষ। Election হয়ে গেলো। আমার friends গুলো আমার জন্যে অনেক কষ্ট করেছেন দুই দিন, কারন ভোট গ্রহন হয়েছিল দুই দিন ব্যাপী। election এর ফলাফল প্রথম বাঙ্গালী হিসেবে জি.এস হিসেবে পাশ করে গেলাম।

২০০৯ সাল আমাকে অনেক কিছু দিলেও কিছু tragedy ছিল আমার জীবনে। সদ্য election'a পাশ করে কলেজের কাজে নিজেকে নিয়ে busy হয়ে গেলাম, এই দিকে LLB (Hons) final year exam চলে এসেছে। যথারীতি পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছি। একদিন এক পরীক্ষায় পরীক্ষা শুরু হবার আগেই invigilator এমন একটা কাজ করলো আমার পরীক্ষা দেওয়ার concentration হারিয়ে ফেললাম। তার ছোট্ট একটা ভুল কেড়ে নিল আমার জীবনের ৩ টা বছর। আমার পরীক্ষাটা খারাপ হয়ে গেল। Result বের হলো LLB (hons) পাশ করলাম ঠিকই। কিন্তু Bar at Law পড়ার যেই requirement সেটা আর হলো না শুধু মাত্র ওই একটা পরীক্ষা খারাপ হবার কারনে, ২ টা marks কম পাবার কারনে। এবার কি করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। একটা উপায় ছিল আমার জন্যে, Bar standard board এর কাছে discretion এর জন্যে apply করা। আমার marks ভাল ছিল তারপরেও আমি ওইটার জন্যে যাই নাই।

জীবনে ভাল কিছু বড় ভাইয়ের কাছাকাছি থাকার সুযোগ পেয়েছিলাম যাদের এখন কেউ কেউ Barrister কেউ কেউ on the way to be a Barrister .ওনাদের ভালো কিছু উপদেশে নিজেকে নিয়ে শুরু করলাম নতুন এক যুদ্ধ। যেই যুদ্ধে আমি একাই সৈনিক। যে LLB আমি ৩ বছরে শেষ করেছিলাম সেই LLB এবার আমি দুই বছরে আবার করার মনস্থির করলাম। এমন এক university তে admission নিলাম যেখানে কোনো বাঙ্গালী নাই। আর আমার পরিচিত কেও নাই। বলা চলে আমি এক প্রকার exile'এ চলে গেলাম। যাই হোক অনেক চড়াই উত্রাই পেরিয়ে আমি আমার double LLB টা শেষ করে ফেললাম। যদিও এটা নিয়ে আমার credit নেওয়ার কিছু নাই এবং আমি সেটা নেইও না কিন্তু এই LLB টা তে আমার তৃপ্তি ছিল। কারন Bar at Law করার জন্যে যে requirement টা লাগে সেটা আমি এই degree তে achieve করেছিলাম। Application করলাম Bar at Law এর জন্যে। Offer পেয়ে গেলাম।

অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হয় যে আমার জীবনে সমস্যা আমাকে ছাড়ে না। প্রতিনিয়ত আমি সমস্যায় পড়ে যাই। একটার পর একটা লেগেই আছে। হাজার সমস্যার মাঝে থাকলেও আমি নিজেকে খুব সুখি রাখার চেষ্টা করি।  আমি সেই লক্ষ্যে পৌছাতে চাই যেখান টাতে আমার বাবা আমাকে দেখতে চেয়েছেন। আমি জানি না এই Bar at Law degree টা তে কি আছে শুধু এইটুকু জানি এটা আমার বাবা মায়ের dream ছেলেকে Barrister হিসেবে দেখা। বাবা মা আমার কাছ থেকে কিছুই চায় নাই শুধু এই একটা degree ছাড়া। এতটুকু যদি না পারি তাহলে হয়তো সেই কলেজের পাওয়া Principal Award টা বাবা মায়ের কাছে ভুল প্রমানিত হবে যদিও আমি জানি আমি সেই award টার যোগ্য ছিলাম না । কাজেই বাবা মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে এখনো আমি যুদ্ধে হার মানিনি। ক্ষমতায় যাবার যে যুদ্ধ হয় সেটা শেষ হয় অল্প সময়ে এক পক্ষের পরাজ‍‍য়ের মধ্যে দিয়ে কিন্তু জীবন যুদ্ধ অনেক কঠিন সেটা অবিরত চলতে থাকে। এই যুদ্ধ সেদিনই শেষ হবে যেদিন আমি আর এই পৃথিবীতেই থাকবো না..............।

বিঃ দ্রঃ বানান ভুলের জন্যে ক্ষমা চাই। বাংলা ইংলিশ একসাথে লিখার জন্যে দুঃখিত। কারন ওই কথাগুলো বাংলা লিখতে পারছিলাম না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন