শনিবার, ১৮ মে, ২০১৩

বাংলাদেশের বিদ্যমান রাজনিতী নিয়ে আমাদের সঙ্কা !

আমাদের উন্নতির প্রধান অন্তরায় নিহিত রয়েছে রাজনৈতীক দলের গঠনতন্ত্রে। এখানে যে যাই কিছু করুক তার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিবে একমাত্র দলীয় প্রধান। দলীয় ফোরামে যা কিছু আলোচনা হোক না কেন সেখানে দলীয় প্রধানের মনগড়া সিদ্ধান্তই হল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে,তাহলে সেই অভিযোগের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নিবে কে? উত্তর হচ্ছে প্রশ্ন কর্তা একজন পাগল! দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা মানে আপনি দলের ভেতরে সংস্কারপন্থি হিসেবে বিবেচিত হবেন। এই যদি হয় আমাদের রাজনৈতীক দলগুলোর ভিতরের গনতন্ত্রের চর্চা তাহলে দেশের সাধারন মানুষের অভিযোগ গুলো আমরা কার কাছে তুলবো। যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে বিরোধী দল ওই সরকার পতনের অন্দোলনে নেমে পড়ে। ধরে নিলাম সরকার পতন হল এখন ক্ষমতায় আসবে কে? উত্তরটা সবাই জানি।

 এখন কথা হচ্ছে এমন যদি হতো সরকার পতনের সাথে সাথে দলীয় প্রধানের পদ থেকে দলীয় প্রধান সরে দাড়িয়েছেন এবং নতুন একজন স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তাহলে ধরে নেওয়া যেতো এই দলটা যখন আবার বিরোধী দলে থাকবে তখন এরা আবার একজন দায়ীতবশীল বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবে। আমাদের দেশে বিরোধী দল মানেই হল হরতাল দেওয়া, ভাংচুড় করা,সংসদে না যাওয়া, সংসদে না গিয়েও মাস শেষে বেতন ভাতা নেওয়া, একজন সাংসদ হিসেবে সবধরনের সুযোগ সুবিধা নেওয়া। একদল হরতাল দিল ১৭৩ দিন আবার আরেক দল যখন বিরোধী দলে আসলো তখন তারা আবার ওই ফিগারটাকে বীট করার যুদ্ধে নেমে গেলো। হরতালে যখন গাড়ি ভাংচুড় কম হয় তখন সরকারী দল ঘোষনা দেয় জনগন হরতাল প্রত্যাখান করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে এই ধরনের বক্তব্য বিরোধী দলের প্রতি কতটা উষ্কানিমূলক সেটা পরবর্তী হরতাল গুলোকে দেখলেই বুঝা যায়। কারন পরের হরতালেই শুরু হয় ঝালাও পোড়াও তান্ডপ।

 আবার এই দিকে সাংবাদিক গুলোও যখন হরতাল নিয়ে রিপোর্ট করে তখন রিপোর্টের এক পর্যায়ে বলতে শুনা যায় এই ভাবেই পালিত হলো ডিলেডালা হরতাল। এইটার মানে কি আমার বোধগম্য নয়। ডিলেডালা হরতাল মানে কী? আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে জাতীয় সমস্যা গুলোর ব্যাপারেও আমাদের বড় দুই দলের মধ্যে কোনো ঔক্যমত আমরা দেখতে পাই না। সরকারী দল এইটা সাপোর্ট করে তার মানে বিরোধী দলকে এর বিরদ্ধে অবস্থান নিতে হবে। এইভাবেই এগিয়ে চলছে আমদের রুগ্ন গনতন্ত্র। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি আমাদের এই সোনার বাংলাদেশে তেমন ভাবে ছিল না আজকে সেটাও তোড়ঝোড় ভাবে শুরু হয়ে গেছে।  এরপর কি নিয়ে হবে জানি না।

 চারিদিকে যখন পরিবর্তনের সুর ঠিক তখনই দেখলাম আমি নিজেই পরিবর্তন হবার চেষ্টা করছি না। যাই কিছু বলি না কেন দেখা যাবে আমার নিজের দলের প্রতি আমার আনুগত্যটা প্রবল। তাহলে আর জনৈতীক দলগুলোকে দোষারুপ করে লাভ কি? গণজাগরন মঞ্ছটাকে আমরা সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারি নাই। এই মঞ্ছটা আসলে ছিলো বাঙ্গালী জাতির দীর্ঘদিনের পোষে রাখা ক্ষোবের ফসল। এই মঞ্ছটা হওয়া উচিত ছিলো রাজনীতিবীদদের কাছ থেকে ৪২ বছরের হিসাব নিকাসটা খুব ভালো করে বুঝে নেওয়ার। কিন্তু সেটাতো হলই না বরং অদূর ভবিষতে আরকেটা গণজাগরন মঞ্ছ করার চিন্তা করলে সেটা হবে মৌলবাদীদের মঞ্ছ। কারন জামায়াত শিবির এবং হেফাজতে ইসলাম ইতিমধ্যে তাদের আগমনের বার্তা বিভিন্ন তান্ডবের মাধ্যমেই বুঝিয়ে দিয়েছে।

কাজেই সময় এসেছে দলীয় রাজীনতি থেকে বের হয়ে নিরপেক্ষভাবে দেশটাকে নিয়ে ভাবা। এরপর লক্ষ্য ঠিক করা এবং সেই উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করা। জয় আমাদের হবেই কারন ভাষার জন্যে রক্ত দেবার ইতিহাস একমাত্র আমারা বাঙ্গালীরাই গড়েছি। অস্ত্র ছাড়াই দেশকে শত্রু মুক্ত করার শক্তি আমরা বাঙ্গালীরাই প্রথম দেখিয়েছি। কাজেই আমদের চেয়ে খাটি দেশ প্রমিক আর কে?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন